Tech Trends 2021

আমাদের খুব পরিচিত পৃথিবীটা কেমন অন্যরকম হয়ে গেলো! গত বছর থেকে শুরু হওয়া বৈশ্বিক মহামারির কারণে সারা বিশ্বেই নানান ধরনের সামাজিক পরিবর্তন ঘটেছে। তবে পরিবর্তনের সাথে সাথে আমরাও অভ্যস্থ হয়ে উঠছি নিউ নরমাল বা নতুন ধরনের লাইফস্টাইলের সাথে। আর এই নতুন সময়ের সাথে এগিয়ে যেতে কোন ধরনের প্রযুক্তি আমাদের সাহায্য করবে? টানা ছয় বছরের মতো স্যান্ডবার্গ ও টেলিনর রিসার্চ টিম গত বছর বিশ্লেষণ করে ২০২১ সালে শিক্ষা, কাজ কিংবা একাকিত্ব দূর করতে প্রযুক্তি, ইন্টারনেট সুরক্ষা’সহ পাঁচটি টেক ট্রেন্ড’এর বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন।

ট্রেন্ড ১: মানসিক স্বাস্থ্যজনিত অসুস্থতা মোকাবেলায় প্রযুক্তির ব্যবহার

কোভিড-১৯ মানুষের মাঝে বিচ্ছিন্নতা ও একাকিত্বের বিষয়টিকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলেছে। স্যান্ডবার্গ বলেন, ‘এটি এমন একটি স্বাস্থ্য সমস্যা, যা মোকাবিলায় ২০২১ সালে নানান ধরনের প্রযুক্তির সাহায্য দরকার হবে। ধারণা করা হচ্ছে ই-হেলথ খাতের আরও বিকাশ ঘটবে। হলোগ্রাফিক কমিউনিকেশন টুল হিসেবে অগমেন্টেড ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি’র ব্যবহার দেখা যেতে পারে আগামী বছরের মধ্যেই।’
তাছাড়া যারা নিঃসঙ্গতায় ভুগছেন তাদের জন্য তৈরি হতে পারে নতুন প্রজন্মের চ্যাটবট, যেখানে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, কল করার সুবিধা ও বিনোদন’সহ নানান ধরনের সুবিধা থাকবে।

ট্রেন্ড ২: গ্রিন টেকের জন্য একটি ডিজিটাল বসন্ত

সারা পৃথিবীর শহরগুলোতে ডেটা সেন্টার এবং মোবাইল বেস স্টেশনে জ্বালানি খরচ সাশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। এ ধরনের উদ্যোগ সাহায্য করবে স্মার্ট শহর তৈরিতে।
কৃষকদের কৃষি শ্রমিক খুঁজে পেতে শহরের বাইরে নতুন অটোনমাস মডুলার রোবট ক্ষেতে কাজ করবে। মেশিনের মাধ্যমে আগাছা পরিষ্কার পদ্ধতি কমিয়ে আনবে কীটনাশকের ব্যবহার।

ট্রেন্ড ৩: পাসওয়ার্ড আতংক:  সাইবার সুরক্ষায় নতুন চ্যালেঞ্জ

যারা সঠিক পাসওয়ার্ড ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন নন তারা ২০২১ সালে 'পাসওয়ার্ড আতঙ্ক' নামক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে পারেন। স্যান্ডবার্গ-এর মতে, ‘২০২১ সালে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার বা আইরিস এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানিং সুবিধা আরও বেশি প্রচলিত হবে যার মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যা সহজেই সমাধান করা সম্ভব!’ 

ট্রেন্ড ৪: কাজ ও সোশ্যাল লাইফ ম্যানেজ করা সহজ হবে

২০২০ সালে আমরা অনেকে বাড়ি থেকেই অফিস করেছি। এই পরিবর্তন সবসময়ের জন্য একটা বিষয় নিশ্চিত করছে যে, কানেক্টিভিটি এবং সঠিক ডিজিটাল টুলসের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় কাজ করা সম্ভব। আজকের কফিশপগুলো যদি আগামী দিনে মিটিং রুম হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে অবাক হওয়ার কিছু নেই! 
স্যান্ডবার্গ আশা করেন ২০২১ সালে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের অফিসের বাইরে থেকেও কাজের সুযোগ দিবে। আর এক্ষেত্রে সাইবার সুরক্ষা ও ডিজিটাল হাইজিন, ডিজিটাল টুলস এবং প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কিত দক্ষতা বৃদ্ধির উপর নিশ্চয়ই আরও মনোযোগ দেওয়া হবে।

ট্রেন্ড ৫: শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবধান নিয়ে ভাবনা

যদিও লকডাউনের সময়ে ডিজিটাল শিক্ষার বিস্তারে নতুনত্ব তৈরি হয়েছে তবু ইন্টারনেট না থাকায় লাখ লাখ শিশু ও তরুণ ঠিকমতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি। ২০২১ সালে ডিজিটাল শিক্ষায় তৈরি হতে পারে নতুন ধরন, যেখানে নেটওয়ার্ক অ্যাকসেস ও ইন্টারনেট অ্যানাবলড ডিভাইস আছে এমন সবাই এই সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। স্যান্ডবার্গ বলেন ‘শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবধান দূর করতে আইসিটি খাতকে শক্তিশালী ও দ্রুত নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে একসাথে কাজ করতে হবে।’
সংকট যেমনই হোক নতুন সময়ের সাথে নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়া চাইলেই সম্ভব! সংকট থেকে সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যেতে আসুন প্রযুক্তির নতুন নতুন সুবিধাগুলোকে কাজে লাগাই আমরা সবাই!  

grameenphone