বিশেষজ্ঞের দিকনির্দেশনা ও প্রশিক্ষণে উপকৃত হবেন হাজারো ‘আইডিয়াপ্রেনর’
[ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩] তরুণ উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে “জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা” শীর্ষক রিজিওনাল ডিজাইন বুটক্যাম্প শুরু করেছে গ্রামীণফোনের ফ্ল্যাগশিপ স্টার্টআপ ইনোভেশন প্ল্যাটফর্ম জিপি এক্সেলারেটর। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সম্মানিত সমাজ সংগঠক, স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা, জিপি এক্সেলারেটর (জিপিএ)’এর এলামনাই, সংশ্লিষ্ট শিল্পের বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষকগণ সহ নানা খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব ও অংশীজনদের উপস্থিতিতে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। উপস্থিতিরা সঠিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ ও যথাযথ দক্ষতা বিকাশের মাধ্যমে অনন্য সব আইডিয়াকে ঘিরে তরুণদের উদ্ভাবনী স্টার্টআপ উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনের সক্ষমতাকে উৎসাহিত করার জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। আঞ্চলিক পর্যায়ে আয়োজনটির সফল ও কার্যকরী বাস্তবায়ন নিশ্চিতে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে জিপি এক্সেলারেটর’কে সহযোগীতা করছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও সামি আহমেদ, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান সহ অন্যান্য সম্মানিত কর্মকর্তাবৃন্দ।
“জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা” শীর্ষক এই আয়োজন মূলত আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা ও স্থানীয়ভাবে নানা সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত করবে। ৩০ জন কমিউনিটি বিল্ডারের সমন্বয়ে এবং দেশের ২০ টি অঞ্চলে পিচ সেশনের মাধ্যমে আয়োজনটি সেরা ২০ জন ‘আইডিয়াপ্রেনর’ খুঁজে বের করবে এবং তাদেরকে পুরস্কৃত করবে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তাদেরকে মাথায় রেখে এই আয়োজনটি ডিজাইন করা হয়েছে। উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণে আগ্রহী তরুণদেরকে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন, নেটওয়ার্কিং এবং ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সহযোগীতা ও দিকনির্দেশনা প্রদান করবে রিজিওনাল ডিজাইন বুটক্যাম্প। এই প্রচেষ্টা বাংলাদেশের যুব জনসংখ্যার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট নেশন হওয়ার লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী মানসিকতা আর উদ্যোগী স্পৃহাকে কাজে লাগাতে একটি শক্ত ভিত্তি গড়ার ক্ষেত্রে জিপি এক্সেলারেটর’এর “জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা” আয়োজনটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের চাই দক্ষ তরুণ উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক, আর এরকম আয়োজনগুলো তরুণদের অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাকে বের করে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। হাজারো তরুণ ‘আইডিয়াপ্রেনর’ খুঁজে বের করা ও স্টার্টআপ গুলোর পাশে দাঁড়াতে গ্রামীণফোন যে প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা দিচ্ছে, তার প্রতি আমার সাধুবাদ রইল। গ্রামীণফোন এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ- এর এই অংশীদারিত্ব আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ রূপকল্পের সাথে একাত্মতা পোষণ করে। ভবিষ্যতে দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে আয়োজনটির ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাবো বলেই আমার বিশ্বাস”।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ- এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও সামি আহমেদ বলেন, “দেশে স্টার্টআপ উদ্ভাবন উৎসাহিত করা এবং আগ্রহীদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে “জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা” শীর্ষক রিজিওনাল ডিজাইন বুটক্যাম্প একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। তরুণ উদ্যোক্তারা তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলো বাস্তবসম্মত এবং বাজারমুখী দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরতে পারবেন, এমন একটি উদ্যোগ গঠনে জিপি এক্সেলারেটর’এর সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে স্টার্টআপ বাংলাদেশ আনন্দিত। এই বুটক্যাম্পগুলো শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ ও পরামর্শই প্রদান করবে না, বরং উদ্যোক্তাদের হাতে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তুলে দেবে, যেগুলো কাজে লাগিয়ে তারা অসাধ্য সাধন করতে পারবেন। আমরা বিশ্বাস করি যে উদ্যোগটি বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবে”।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, “সামাজিক ক্ষমতায়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্মার্ট ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়তে গ্রামীণফোন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জিপি এক্সেলারেটর আমাদের এই প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। “জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা শীর্ষক রিজিওনাল ডিজাইন বুটক্যাম্প সারা দেশে উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে আমাদের চলমান প্রচেষ্টার নতুন একটি ধাপ। এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো। তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলো উল্লেখযোগ্য আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে বলে আমরা আশাবাদী। এই বুটক্যাম্প হাজারো উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করার পাশাপাশি স্টার্টআপ কমিউনিটির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে, যা সম্মিলিতভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে অবদান রাখবে”।
২০১৫ সালে কার্যক্রম চালুর পর থেকে দেশের স্টার্টআপ খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে জিপি এক্সেলারেটর। এটি ৫০টি স্টার্টআপের মাধ্যমে ৫ লক্ষ মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। এর আওতায় নানা সম্ভাবনাময় স্টার্টআপের বাজারমূল্য ১০গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলারেরও বেশি ভ্যালুয়েশন অর্জন করেছে। এ থেকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে জিপি এক্সেলারেটর’এর অবদান অনুধাবন করা যায়।